By BIDISHA CHAKRABORTY
আমি যে পথে হেঁটে চলেছি -
সে পথে হেটেছে আমার পূর্বপুরুষেরা,
আজও সেই স্মৃতি মাখা মধুর ছাপ রয়ে গেছে; এই গ্রাম বাংলার রন্ধ্রে রন্ধ্রে...
এই পথ ,এই মাঠ, এই ধান ক্ষেত,
আমাকে মুগ্ধ করে, আমার শান্তি যোগায়!
মনে করিয়ে দেই আমার জননী মায়ের আলতা রাঙ্গা পায়ের ছবি, সাঁঝের বেলায় সেই রাঙ্গা পায়ে সাঁকো ধরে জল নাইতে নেমেছে আমার মা, কাকিমা ; স্বপ্ন তে খেলা করে তার আঁচলের স্নেহচ্ছায়ায় বড় হয়ে ওঠার প্রতিটি গল্প,
বারংবার আমি মুগ্ধ হয়ে
এই মেঠো পথ এই ধান ক্ষেত, শাল বন,
চেয়ে চেয়ে দেখি....স্মৃতি ঘিরে ধরে, মনে পড়ে যায় কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা....
আবার আসিব ফিরে , ধান সিড়িটির তীরে,
এই বাংলায়।
কখনো মনে হয়, পুরনো সব স্মৃতি গুলো
এপার ওপার দোলাচল করে আমার সুখ দুঃখের হাত ধরে।
তাদের ঘ্রাণ যেন আমাকে মনে করিয়ে দেই,
আমার বংশ পরিচয় , আমার কর্তব্য , আমার সচেতনতা ....
তাদের পদ চিহ্ন আজও যেন কথা রেখে গেছে এই মেঠো পথে,মাটির এই ভগ্ন স্তুপে।
চাকুরী সূত্রে যেতে হয়েছে বহু দূরে; সেই প্রবাসের ঘরে।প্রবাস যুগিয়েছে ঠিকই; আমার অন্ন,
আমার পরনের কাপড়, জুগিয়েছে হাজারো সুবিধে,টিভি, ফ্রিজ এসি, সুখে থাকার হাজারো রসদ
তবুও কি নিজ দেশের সেই মৃদু মন্দ বাতাস,মাটির কুঁড়ে ঘরের ছাওয়া ,কুজোর জলের মিঠে স্বাদ যা তৃষ্ণার্থ দেহকে করেছে শীতল,মেঠো পথের ভিজে গন্ধ , সূর্যের প্রখর রৌদ্রে বটচ্ছায়ায় শান্তির পরম তৃপ্তি , স্বচক্ষে দেখা প্রকৃতির বিচিত্র রূপ, মায়ের আঁচলের নুন হলুদের গন্ধ,আমি কি আজও ভুলে গেছি? কখনোই না , আজও মনে হয় যেদিন ফিরবো এই প্রবাস থেকে ,প্রথমে গিয়ে জড়িয়ে ধরবো আমার সেই চিরাচরিত পুরনো মলিন ঘরের বালিশ, ঘ্রাণ নেবো জরা জীর্ণ পড়ে থাকা সেই ভগ্ন স্তূপের।
হয়তো প্রবাস আমাকে দিয়েছে অট্টালিকা , সাহেবিয়ানা ,আশাক পোশাক;সুখের চাদর।
তবু দিনের শেষে ঘুমন্ত দেহে শান্তির রাশ টেনে নিয়ে যায় ওই পূর্বপুরুষ ভিটে ই।
বিদিশা চক্রবর্ত্তী"